হিন্দু সম্প্রদায়ের নিজস্ব মুদ্রা,সোনা-রূপার কাঁচাটাকা

পরাধীন সময়ে এদেশীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের ধর্ম সংস্কৃতি রক্ষার জন্যে আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়ে গেছে। শাসক যেহেতু বিদেশী, তারা তো এদেশীয় ধর্ম সংস্কৃতির সমাদর করবে না, এটাই স্বাভাবিক। তখন বহুক্ষেত্রেই তৈরি হয় বিকল্প পন্থা। মুদ্রাতেও এমন একটি বিকল্প পদ্ধতি দেখা যায়।সোনা, রূপা এবং এবং তামায় নিজেদের দেবদেবী খোদিত করে ধাতব মুদ্রা তৈরি করে হিন্দু সম্প্রদায়। এ মুদ্রাকে কাঁচাটাকাও বলা হয়। ধাতুতে ডাইশের ছাপ দিয়ে এগুলো তৈরি করা হত। 
শাসকের নিজস্ব মুদ্রার সাথে, সমানতালে ব্যক্তিগতভাবে বিয়ে সহ আধ্যাত্মিক মাঙ্গলিক সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হত এ নিজস্ব মুদ্রা। এখনো বহু সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে এ মুদ্রাগুলো সংরক্ষিত পাওয়া যায়। মুদ্রাগুলোর অধিকাংশই লুঠ হয় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। সকল আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে সিঁদুর রঞ্জিত করে ছাপ দেয়া হত এ মুদ্রা দিয়ে। বিয়ে ঠিক হলে, আশীর্বাদের দিনে উভয়পক্ষের সম্মতিতে যে পাতিপত্র তৈরি করা হত, সে পাতিপত্রে এ মুদ্রার ছাপ দেয়া হত। পাতিপত্রের মধ্যে বর-কনের বিয়ের দিনক্ষণ, ঠিকানা সহ দুইপক্ষের সকল তথ্য লিখিত থাকব। ছাপটি সিলমোহরের কাজ করত। এ মুদ্রার ছাপসহ পাটিপত্রটি পরবর্তীতে বিয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে গণ্য হত।

চিত্রের মুদ্রাটি আমাদের পরিবারের পারিবারিক সংরক্ষিত মুদ্রা।মুদ্রাটির একপাশে কালী, অন্যপাশে কৃষ্ণ। বাঙালির প্রধান দুই উপাস্য। বাংলা এবং দেবনাগরী লিপিতে খোদিত তাঁদের নাম।প্রাচীন এ মুদ্রাটি শাক্ত বৈষ্ণব সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন। 

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
সনতন বিদ্যার্থী সংসদ

Post a Comment

0 Comments